জম্বি অ্যাপোক্যালিপস কি সত্যিই সম্ভব?

ডেস্ক রিপোর্টঃ

মনে করুন, সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই চিৎকার চেচা-মেচি শুনতে পেলেন। কৌতূহলী হয়ে বাইরে গিয়ে দেখতে পেলেন কিছু বিকৃত আকার ভঙ্গি করা মানুষ অন্য মানুষদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে এবং যাকে ধরতে পারছে তার মাংস কামড়ে ছিঁড়ে ফেলছে । মুহূর্তেই সেই ব্যক্তিও বিকৃত রূূপ ধারণ করছে। বিস্তারিত জানার জন্য যখন নিউজ চ্যানেল দেখতে গেলেন, সেখানে গিয়ে আরো ভয়ংকর কিছু আবিষ্কার করলেন। কারন শুধু আপনার এলাকাতে না, সম্পূর্ণ বিশ্বের মানুষ এইরকম বিকৃত রূপ নিচ্ছে এবং অন্য স্বাভাবিক মানুষদের আক্রমন করে বিকৃত করে দিচ্ছে। নিউজ থেকে আরো জানতে পারলেন এই ঘটনার মূল হলো একটি ভাইরাস। ভাইরাস টি সাধারন মানুষদের  বিকৃত করে জম্বিতে রুপান্তরিত করে দিচ্ছে।

জম্বি অ্যাপোক্যালিপস কি সত্যিই সম্ভব?

শেষ কিছু বছর ধরে জম্বি অ্যাপোক্যালিপস বিষয়টি খুবই আলোচনায় এসেছে, যার মূলে রয়েছে বিভিন্ন টিভি সিরিজ, ওয়েব সিরিজ ও মুভি। যা দেখে যে কারোরই মনে এই প্রশ্ন জাগতে পারে, “জম্বিঅ্যাপোক্যালিপস কি সত্যিই সম্ভব?” আজকের আর্টিকেলে আমরা এই বিষয়টিরই বিজ্ঞান, জৈববিজ্ঞান ও যুক্তির সাহায্যে বুঝার চেষ্টা করব যে জম্বি অ্যাপোক্যালিপস কি সত্যিই সম্ভব?

আরও পড়ুনঃ পিরামিড কি ভিনগ্রহীদের বানানো স্থাপত্য?

জৈববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে জম্বি

জম্বি মুভিতে আমরা দেখতে পাই, কোনো একটি অপরিচিত ভাইরাসের আক্রমনে মানুষ মারা যাচ্ছে এবং মৃতদেহগুলো আবার জীবিত হয়ে উঠছে এবং সামনে যাকে পাচ্ছে আক্রমণ করছে বা জম্বিতে রুপান্তরিত করছে, যা জৈববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে কখনো সম্ভব নয়। কোনো প্রাণী মারা গেলে প্রাকৃতিকভাবেই কিছু ব্যাকটেরিয়া দ্বারা মৃতদেহ পচে এবং অন্যান্য প্রক্রিয়ার মাধমে দ্রুত ক্ষয় হয়ে যায়। তাছাড়া কোনো মৃতদেহের দ্বারা শরীরিক কার্জক্রম ও মস্তিস্কের কার্জক্রমকে বিজ্ঞান কখনোই সমর্থন করে না।

অন্যদিকে, যে ভাইরাস বা পরজীবী গুলো মৃতদেহকে পুনর্জীবিত করতে পারছে সে গুলো প্রকৃতিতে নেই।যদিও টক্সোপ্লাজমা গন্ডির মতো পরজীবী রয়েছে যা নির্দিষ্ট হোস্টের আচরণ পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু একটি ভাইরাস বা পরজীবী দ্বারা মানুষের মধ্যে একটি জম্বি-সদৃশ অবস্থা তৈরির ধারণা সম্পূর্ণরূপে অনুমানমূলক।

যুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে জম্বি

জৈবিক অসম্পূর্ণতার বাইরে, আসুন একটি জম্বি অ্যাপোক্যালিপসের ব্যবহারিক চ্যালেঞ্জ গুলো বিবেচনাকরি।বিশ্বব্যাপী এইধরনের ঘটনা ঘটার জন্য, মৃতদের পুনরুত্থান ঘটাচ্ছে এমনকোনো এজেন্টের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব হওয়া দরকার। যার জন্য প্রয়োজন হবে এমন একটি সংক্রমাণক ভাইরাসের, যা বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান ও চিকিৎসা পরিকাঠামোর বাইরে। যে ভাইরাসের আক্রমনে মানুষ মৃত নরখাদক পরিনত হচ্ছে। এই বিষয়বস্তুটি নিছকই কল্পনা, যার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

জম্বি অ্যাপোক্যালিপসের ধারণাটি কল্পকাহিনীতেই মানানসই, যা আমাদের বাস্তব জীবনেই কখনই সম্ভব না। এইগুলো কাল্পনিক সৃষ্টি যা প্রায়শই বিভিন্ন সিনেমা টিভি মাধ্যম গুলোতে দেখা যায়। এইগুলো শুধুই বিনোদনমুলক।

বিজ্ঞান ও যুক্তির বাইরে গিয়ে যদি জম্বি অ্যাপোক্যালিপস নিয়ে আমি নিজস্ব কোনো মন্তব্য করি, তবে আমি বলব, “হ্যা, জম্বি অ্যাপোক্যালিপস সম্ভব।“ চলুন জম্বি অ্যাপোক্যালিপস নিয়ে আমার কিছু নিজস্ব ধারনা নিয়ে কথা বলি।

বর্তমানে আমরা প্রযুক্তির দিক থেকে ব্যপকভাবে এগিয়ে গিয়েছি। বিজ্ঞানিরা নতুন নতুন আবিষ্কার নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হচ্ছে। এই সব আবিষ্কার আমাদের যে রকম উপকার করছে ঠিক তার অনুরূপ আবিষ্কার আমাদের ক্ষতিও করছে, যেমন পারমানবিক বোমা। বিজ্ঞানের অগ্রগতির ধারাবাহিকতায় অদূর ভবিষ্যতে এমন একটি ভাইরাস আবিষ্কার করা অসম্ভব নয়, যেটি মানুষের মস্তিস্কে গিয়ে মানুষকে হিতাহিত জ্ঞানশুন্য করে তাকে হিংস্র নরখাদকে রুপান্ত্রিত করে দিতে পারবে না। অথবা টক্সোপ্লাজমা গন্ডির মতো এমন একটি পরজীবি অবিষ্কার করে ফেলতে পারবে যেটি মানুষের মস্তিস্ককে নিয়ন্ত্রন করতে পারবে এবং মানুষকে পরিনত করে দিতে পারবে হিংস্র নরখাদকে। WHO KNOWS THE FUTURE?

কালচক্র/ লিমন দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *