বিশ্বকাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার

কালচক্র ডেস্ক :

চলমান বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা- দুই দলই চারটি ম্যাচ খেলে তিনটি ম্যাচে হেরেছে। বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা জিতেছে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। তাই দুই দলের জন্যই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে খেলার পথ কঠিন হয়ে গেছে। সামনে কোনো ম্যাচে হারলেই সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে তাদের। তাই ‘অলআউট’ ক্রিকেট খেলে জয় তুলে নেয়া ছাড়া বিকল্প নেই তাদের। এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে আজ পরস্পরের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বেলা আড়াইটায় দুই দলের ম্যাচটি শুরু হবে। এই ম্যাচের চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

এ পর্যন্ত বিশ্বকাপে মোট ১১ বার পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে ৬টি ম্যাচে জয়ের রেকর্ড ইংল্যান্ডের। ৫টি ম্যাচে জিতেছে লঙ্কানরা। জয়ের সংখ্যায় পিছিয়ে থাকলেও ১৯৯৯ সালের পর বিশ্বকাপের কোনো আসরেই শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারেনি ইংলিশরা। ২০০৭ সালের আসরে ২ রানের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ২০১১ সালের আসরে ইংল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিল দ্বীপ দেশটি। এরপর ২০১৫ সালেও ৯ উইকেটের দাপুটে জয় পায় অর্জুনা রানতুঙ্গা, সনাৎ জয়সুরিয়ার উত্তরসূরিরা। গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে তাদের ঘরের মাটিতে ২০ রানে হারায় লঙ্কানরা। বিশ্বকাপে এই টানা জয়ের রেকর্ড ধরে রাখতেই আজ মাঠে নামবে তারা। অন্যদিকে, তিন ম্যাচে হারের হতাশা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্য ইংল্যান্ডের। দুই দলের ম্যাচটি খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বর্তমান রানার্সআপ নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করা ইংল্যান্ড এখনো স্বরূপে ফিরতে পারেনি। বোলিং ব্যর্থতা, ভুল সিদ্ধান্ত, বিবর্ণ ব্যাটিং- সবকিছু মিলিয়ে হতাশ দলটি। সেই হতাশার ছবি লুকাতে পারেননি ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক জস বাটলারও। তবে আত্মবিশ্বাস হারানো যাবে না, সব শেষ হয়ে যায়নি- এমন বার্তা দলের মধ্যে দিয়ে রেখেছেন অধিনায়ক। কিন্তু ব্যাট হাতে বাটলার নিজেও সুবিধা করতে পারছেন না। রানখরায় ভুগছেন। ঘুরে দাঁড়াতে হলে তাকেও ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে হবে। তবে তাদের দলের সেরা পেসার রেস টপলি ইনজুরিতে পড়েছেন। তার বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে। এটি ইংল্যান্ড দলের জন্য বড় ধাক্কা। যদিও তার বদলে ব্রাইটন কার্সকে দলে নেয়া হয়েছে। তবে আজ তাকে মাঠে নামানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়নি ইংল্যান্ড। নতুন বলে অ্যাথিনসনের সঙ্গে জুটি বাঁধতে পারেন ক্রিস ওকস।

এদিকে, নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪২৮ রানের রেকর্ড স্কোর গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তানও প্রায় সাড়ে তিনশ রান করেছে। এতেই বোঝা যায়, শ্রীলঙ্কার বোলিং লাইনআপ কতটা দুর্বল। এই ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করবে তারা। বিশ্বকাপ ঘিরে বড় প্রত্যাশা না থাকলেও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে যাওয়ার লক্ষ্য থাকবে তাদের। শ্রীলঙ্কা দলের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো তাদের ইংলিশ ক্রিস কোচ সিলভারউড। ইংল্যান্ড দল সম্পর্কে বেশ ভালো করে জানা তার। সেটি বেশ কাজে দেবে লঙ্কানদের। এতে ইংল্যান্ডকে ব্যর্থ করার জন্য ভালো করে কৌশল আঁটতে পারবে দলটি। আফগানিস্তান হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে।

আফগান দলের কোচও একজন ইংলিশ। তার নাম জনাথন ট্রট। ইংল্যান্ডের সাবেক এই ক্রিকেটার যে রণকৌশলে রশিদ খানদের খেলিয়েছেন, তাতে সফল হয়েছে আফগানরা। একইভাবে শ্রীলঙ্কাও লাভবান হতে পারে। লঙ্কান দলের শক্তি বেড়েছে সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ফেরায়। তবে তিনি মাঠে নামবেন কি না- এ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। বেঙ্গালুরুর যে মাঠে খেলা হবে, সেখানে সব সময় হাই-স্কোরিং ম্যাচ হয়ে থাকে। সেখানে প্রচণ্ড গরমও পড়েছে। আগে ব্যাটিংয়ে নামা দল বেশি সুবিধা আদায় করে নিতে পারবে। ইংল্যান্ড যদি আবার আগে ফিল্ডিংয়ে নামে, তাহলে বেকায়দায় পড়তে পারে। মুম্বাইয়ে প্রায় একই কন্ডিশনে গত ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে বড় হারের লজ্জায় পড়েছিল ইংল্যান্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *