পিঁপড়ার ডিম বিক্রি করে ১৬ বছর ধরে সংসার চালাচ্ছেন সিদ্দিক

জীবিকার জন্য কত বিচিত্র কাজই না করে মানুষ। তেমনি এক বিচিত্র পেশা পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করা। এরা বন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করে পিঁপড়ার ডিম। তাও আবার লাল পিঁপড়ার ডিম। মাছ শিকারিদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান হচ্ছে পিঁপড়ার ডিম। এসব ডিম সংগ্রহের পর তা বিক্রি করে যা উপার্জন হয়, তা দিয়েই চলে তাদের সংসার।

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার মাকরাই এলাকার পাহাড়ি বনের ভিতর দেখা মেলে এমন এক পেশার মানুষের সঙ্গে। তার নাম আবুবকর সিদ্দিক। বয়স ৪৫ বছর। তিনি কাঠ ফাটা রোদ আর ভাপসা গরমে ঘামার্ত শরীরে খোঁজে বেড়াচ্ছেন লাল পিঁপড়ার ডিম। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া এলাকার কৈয়েরচালা গ্রামে। তিনি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পিঁপড়ার ডিম বিক্রি করে সংসার চালান।

পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহকারী আবুবকর সিদ্দিক বলেন, সব পিঁপড়ার বাসায় ডিম পাওয়া যায় না। খোঁজতে হয় লাল পিঁপড়ার বাসা। যেখানে মিলবে প্রচুর পরিমাণ সাদা রঙের ডিম। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে সংগ্রহ করতে হয় এই ডিম। সারা দিনে ১ থেকে দেড় কেজি ডিম সংগ্রহ করতে পারি। তিনি আরও বলেন, এক সময় পিঁপড়ার ডিম সারাদিন সংগ্রহ করে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যেত। এখন সারাদিন পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা বিক্রি করতে পারি।

সাধারণত দেশীয় গাছগুলোতেই লাল পিঁপড়ার বাসা পাওয়া যায়। তবে আমাদের এখানে শালবনে গাছের ডালের আগার দিকের চার-পাঁচটা পাতা মুখের লালা দিয়ে জোড়া দিয়ে শক্ত বাসা তৈরি করে পিঁপড়ার দল। ওই সব বাসা থেকেই ডিম পাওয়া যায়। বড় বাসা থেকে ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম ডিম পাওয়া যায়। এই ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজটি খুব সতর্কের সঙ্গে করতে হয়।

সাগরদীঘি বাজারের শৌখিন মাছ শিকারি আব্দুস সামাদ, এবাদুল্লা চৌধুরী জুয়েল এবং সাজাহান মিয়া জানান, লাল পিঁপড়ার ডিম মাছ শিকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। মাছ শিকারিদের কাছে এর চাহিদা অনেক। প্রায় ১৬ বছর ধরে পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করছেন তিনি। তবে শুধু আবুবকর সিদ্দিক নয়। পিঁপড়ার ডিমে জীবিকা নির্বাহ করে গ্রাম বাংলার অনেক মানুষ।

More From Author

ইউএনও হচ্ছেন অভিনেত্রী সাবিলা নূর

মার্শেইকে হারিয়ে ঝাল মেটালো পিএসজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *