বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে বাড়ছে বাংলাদেশি নেতৃত্ব

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শীর্ষ পদে বাড়ছে বাংলাদেশি নেতৃত্ব। বর্তমানে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন অর্ধশতাধিক বাংলাদেশি।

ব্যাংকিং, টেলিযোগাযোগ, ফার্মাসিউটিক্যাল, টোব্যাকো, জনপ্রিয় ভোগ্যপণ্য ও পোশাক খাতের মতো খাতগুলোর বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশিরা প্রধান কর্তাব্যক্তি হিসেবে কাজ করছেন। এদের মধ্যে অতি পরিচিত কিছু নাম হলো ওমর ইশরাক, ইমরান খান, লুমাত আহমেদ, আবরার আনোয়ার, আতা সাফদার ও এ (রুমি) আলী।

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষস্থানীয় পদে দেশীয় কর্মকর্তা হিসেবে বর্তমানে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের মধ্যে ইউনিলিভার বাংলাদেশের জাভেদ আখতার, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের নাসের এজাজ বিজয়, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেহজাদ মুনিম, এইচএসবিসি বাংলাদেশের মো. মাহবুব উর রহমান, গ্রামীণফোনের ইয়াসির আজমান, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের রুপালী চৌধুরী, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী, ওরাকল বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (নেপাল ও ভুটান) রুবাবা দৌলা উল্লেখযোগ্য।

১৯৯৭ সালের এপ্রিলে এ (রুমি) আলী এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংক বাংলাদেশের আঞ্চলিক শাখা প্রধান হিসেবে নিয়োজিত হন, প্রতিষ্ঠানটি ২০০২ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সঙ্গে একীভূত হয়। দুই বছর তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও হিসেবে কাজ করছেন।

আতা সাফদার ২০০২ সালে রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত হন। এই পদে তিনি পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি লন্ডনে স্কাইলার্ক ফাইন্যান্সে পরিচালক হিসেবে কর্মরত।

গোলাম মাইনুদ্দিন ২০০৮ সালের আগস্ট থেকে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত। শেহজাদ মুনিম ২০১৩ সাল থেকে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন।

২০১৩ সাল থেকে মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। এর আগে তিনি বার্জার পেইন্টস, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন এসএসএল ওয়্যারলেসে প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন।

২০১৬ সালে মাহতাব উদ্দিন রবির প্রথম বাংলাদেশি সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত হন। তিনি ২০১০ সালে এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।

আবরার আনোয়ার ২০১৭ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক মালয়েশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে তিনি ব্যাংকটির বাংলাদেশ অপারেশনসের সিইও হিসেবে কাজ করেন।

২০১৭ সালের নভেম্বরে নাসের এজাজ বিজয়কে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এর আগে তিনি ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও করপোরেট অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ক্লায়েন্টস বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন।

ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন জাভেদ আখতার। ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ইউনিলিভারে যোগ দেন।

২০০১ সাল থেকে শুরু করে সাড়ে ৯ বছর ধরে সিটিব্যাংক এনএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন মামুন রশিদ। তিনি বর্তমানে প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারসেরও (পিডব্লিউসি) ম্যানেজিং পার্টনার হিসেবে কাজ করছেন।

২০০৮ সাল থেকে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত রুপালী চৌধুরী। সাধারণ কর্মী থেকে নিজ দক্ষতায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার শীর্ষ পদে ওঠার নজির গড়েছেন তিনি। কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত একমাত্র বাংলাদেশি নারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুপালী চৌধুরী। বিদেশি ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফরেন চেম্বারের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করা একমাত্র নারীও তিনি।

২০১৩ সাল থেকে সানোফি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন মইন উদ্দিন মজুমদার। তিনি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগদান করেন।

লুমাত আহমেদ গত বছর ফরাসি পোশাকের ব্র্যান্ড ‘লাকস্টে’র সোর্সিং ক্যাটাগরি ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

ইমরান খান ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি স্ন্যাপচ্যাটের চিফ স্ট্রাটেজি অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি লাইভস্ট্রিম শপিং অ্যাপ ‘ভেরিশপ’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী ড. ওমর ইশরাক আহমেদ ২০২০ সালের মে মাসে ইন্টেলের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। গত জানুয়ারি মাসে চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন। তবে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে আছেন তিনি।

২০১৯ সালের জুলাইয়ে জিয়াউর রহমান এইচ অ্যান্ড এমের বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইথিওপিয়া শাখার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োজিত হন। এর আগে তার এই খাতে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে।

স্বপ্না ভৌমিক এই মুহূর্তে মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার ব্র্যান্ডের হয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমামের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন। এর আগে তিনি নেক্সট ও ওয়ালমার্টের মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডে কাজ করেছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বহুজাতিক কম্পিউটার প্রযুক্তি করপোরেশন ওরাকল বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (নেপাল ও ভুটান) ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে কাজ করছেন রুবাবা দৌলা। সম্প্রতি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী।

যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বাঙালির বিজয় ও ভাষাসংগ্রাম

চাঁদপুরে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে প্রাণ গেল তিনজনের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *