ঢাবির ১৫ জনসহ ছাত্রলীগের ২১ নেতা-কর্মী বহিষ্কার

চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সাংবাদিককে হেনস্তাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪ নেতা ও সাতজন কর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ। এই ২১ জনের মধ্যে ১৫ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এবং বাকিরা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী।

রোববার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ঢাবি ছাত্রলীগের এক বিজ্ঞপ্তিতে অমর একুশে হল শাখার সাধারণ সম্পাদককে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলা পরিপন্থি, অপরাধমূলক ও সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এই ২১ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগের সব সাংগঠনিক ইউনিটকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক পরিবেশ সমুন্নত রাখা, গঠনতান্ত্রিক আদর্শিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি বজায় রাখা ও স্মার্ট ক্যাম্পাসের উপযোগী স্মার্ট ছাত্ররাজনীতি বিনির্মাণে সচেষ্ট থাকার নির্দেশনা দেয়া হলো।

বহিষ্কার হওয়া ছাত্রলীগ নেতারা হলেন ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য রাহুল রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক মানবসম্পদ বিষয়ক উপসম্পাদক নাজমুল হাসান রুপু, ঢাবির কবি জসিম উদ্‌দীন হল ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তানজীর আরাফাত তুষার, ঢাবি ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক আসাদুল্লাহ আসাদ, একই হলের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান বাধন, গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ পলক, উপদপ্তর সম্পাদক জিহাদুল ইসলাম, অর্থ বিষয়ক উপসম্পাদক আল কাওসার, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক উপসম্পাদক শাওন চৌধুরী এবং কর্মী মো. তারেক।

এ ছাড়া ঢাবির মাস্টার দা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সদস্য ফাহিম তাজওয়ার জয় ও সাজিদ আহমেদ এবং বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের কর্মী ফজলে নাবিদ সাকিল, মো. রাহাত রহমান ও সাদিক আহাম্মদকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে আরও আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অসিত পাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলাম, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক শাহ আলম রাতুল, কর্মী নূর মোহাম্মদ নাবিল ও কর্মী কামরান সিদ্দিক রাশেদ এবং সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মী রাকিবুল ইসলাম রাকিব।

এদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য রাহুল রায় ও ঢাবির কবি জসিম উদ্‌দীন হল ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তানজীর আরাফাত তুষারের বিরুদ্ধে নারীকে হেনস্তা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ ছিল। ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক মানবসম্পদ বিষয়ক উপসম্পাদক নাজমুল হাসান রুপু ও ঢাবি ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের কর্মী মো. তারেকের বিরুদ্ধে গাড়ি দুর্ঘটনার জেরে ক্যানসারে আক্রান্ত ছেলে ও বাবাকে পিটিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ ছিল।

অন্যদিকে ঢাবি ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক আসাদুল্লাহ আসাদ, একই হলের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান বাধন, গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ পলক, উপদপ্তর সম্পাদক জিহাদুল ইসলাম, অর্থ বিষয়ক উপসম্পাদক আল কাওসার, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক উপসম্পাদক শাওন চৌধুরী রুম দখলকে কেন্দ্র করে ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমের কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত।

ঢাবি মাস্টার দা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সদস্য ফাহিম তাজওয়ার জয়, সদস্য সাজিদ আহমেদ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় এক দম্পতিকে হেনস্তা, মারধর ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত। আর কাভার্ড ভ্যান আটকে টাকা ছিনতাই ও চালককে মারধরের অভিযোগে অভিযুক্ত ঢাবি বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের কর্মী ফজলে নাবিদ সাকিল, মো. রাহাত রহমান ও সাদিক আহাম্মদ।

এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অসিত পালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি চলন্ত বাসে এক তরুণকে অজ্ঞান করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আটকে রেখে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছেন। পরে ওই তরুণকে মারধর করে প্রায় অর্ধলাখ টাকা আদায়ের পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলামের বিরুদ্ধে সাংবাদিক হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরতে যাওয়া এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে অভিযুক্ত রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক শাহ আলম রাতুল এবং কর্মী নূর মোহাম্মদ নাবিল ও কামরান সিদ্দিক রাশেদ। আর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মী রাকিবুল ইসলাম রাকিবের বিরুদ্ধে এক নারী নেত্রীকে মারধর ও লাঞ্ছনার অভিযোগ রয়েছে।

ঢাবির অমর একুশে হল ছাত্রলীগের সম্পাদককে অব্যাহতি

এদিকে ২১ নেতা-কর্মীকে বহিষ্কারের পাশাপাশি আরেক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান সোহাগকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

চাঁদার জন্য তলব করার পর যেতে রাজি না হওয়ায় এক পানি ব্যবসায়ীকে প্রথমে ফোনে হুমকি-ধমকি দেওয়া ও পরে লোক পাঠিয়ে তার দোকানে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ রয়েছে ইমদাদুলের বিরুদ্ধে।

আইএফসির ৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ পাচ্ছে প্রাইম ব্যাংক

মৃত্যুর মতো এত স্নিগ্ধ-সুন্দর কিছু নেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *