কালচক্র ডেস্ক :
লাল চোখ নিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে নেকড়ে। দেখা পাওয়া যাচ্ছে ফসলি জমিতেও। নেকড়ের হাঁ করা মুখ দেখে যে কারও হাড় হিম হয়ে যাওয়ার কথা। দেখলে আর দশটা নেকড়ের মতোই মনে হবে। তবে এটি সাধারণ কোনো নেকড়ে নয়। আবার সত্যিকারের নেকড়েও নয়। এটি একটি রোবট।
জাপানের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান উলফ কামুই এ ‘নেকড়ে রোবট’ তৈরি করেছে। ফসলি জমি থেকে বন্য প্রাণী তাড়ানোর লক্ষ্যে মূলত এটির নকশা করা হয়েছিল। তবে লোকালয়ে চলে আসা ভালুক তাড়াতেও এখন এটির ব্যবহার হচ্ছে। কারণ, লোকালয়ে মানুষের ওপর ভালুকের আক্রমণ বেড়েই চলেছে।
২০২০ সালে জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের তাকিকাওয়া শহরে প্রথম এ নেকড়ে রোবট ব্যবহার করা হয় বলে জানান উলফ কামুইয়ের প্রেসিডেন্ট মোতোহিরো মিয়াসাকা। সেখান থেকে এটি জনপ্রিয়তা পায়। এর পর থেকে দেশটির অনেক স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ এ রোবট কিনেছে।
জাপানে লোকালয়ে দলে দলে ভালুক ঢুকে মানুষের ওপর আক্রমণ চালানোর ঘটনা বেড়ে চলার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশটির গ্রাম ও মফস্সলে লোকের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। অনেকেই শহরমুখী হচ্ছেন। বিশেষ করে তরুণেরা। তাঁরা বড় শহরে পাড়ি জমাচ্ছেন। এতে গ্রাম ও ছোট শহরগুলো প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই গ্রাম ও মফস্সল শহরগুলোয় ঢুকছে ভালুক। ফলে এসব এলাকায় বাড়ছে নেকড়ে রোবটের চাহিদা।
টোকিও ইউনিভার্সিটি অব অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যাপক শিনসুকে কোইকে বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন গ্রামীণ কৃষিজমির এক পাশে থাকত জনবসতি, অন্য পাশে ভালুক। সেটা আর নেই। মানুষ কমে যাওয়ায় কয়েক দশক ধরে গ্রাম ও ছোট শহরে ঢুকে পড়া ভালুকের দল এখন উজ্বল আলো আর কোলাহলে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা মানুষকে আর ভয় পাচ্ছে না।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভালুকদের লোকালয়ে আসার আরেকটি বড় কারণ হলো, চাষাবাদ কমে যাওয়া। গ্রাম ও ছোট শহরে মানুষ কমে যাওয়ায় অনেক জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে না। এতে ভালুকেরা পড়েছে খাদ্যসংকটে। খাবারের খোঁজে দলে দলে ভালুক আসছে লোকালয়ে।