যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর লেবাননে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন। দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় বিপর্যস্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করছেন কাজে। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহাসিক বন্দরনগর তাইরের জেলেদের মধ্যেও ফিরছে কর্মচাঞ্চল্য। তবে যুদ্ধবিরতি হলেও ইসরাইলের হামলার ঘটনায় আতঙ্কও বিরাজ করছে তাদের মাঝে।
নীল জলরাশির বুকে ভাসছে মাছ ধরার নৌকা। দৃশ্যটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দক্ষিণ লেবাননের ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত তাইরে শহরের। ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে কদিন আগেও এই সাগরে মাছ ধরার কথা ভাবাই যেত না। তবে চলতি সপ্তাহে ইসরাইল-হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ধীরে ধীরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে তাইরেসহ লেবাননের বিভিন্ন শহরে।
এরইমধ্যে অনেক জেলে মাছ ধরতে গভীর সাগরে গেছেন। অনেকে আবার মাছ নিয়ে ফিরে এসেছেন। কেউ কেউ শেষ মুহূর্তে জাল সারাইয়ে ব্যস্ত। অনেকেই আবার বড়শি হাতে আসছেন উপকূলে। অক্টোবর-নভেম্বরে মাছ ধরার মওসুম চললেও যুদ্ধের কারণে সাগরে নৌকা নামাতে পারেননি জেলেরা। তবু মাছ ধরতে যেতে পারছেন এতেই উচ্ছ্বসিত তারা।
আরও পড়ুনঃট্রাম্পের শপথের আগে বিদেশি শিক্ষার্থীদের দ্রুত ফিরে আসার আহ্বান
এক জেলে বলেন, ‘দুই মাস ইসরাইলি যুদ্ধ ও অবরোধের কারণে আমরা অবরুদ্ধ ছিলাম। তবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা, যে আমরা মাছ ধরতে যেতে পারছি।’
লেবাননের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘তাইরে শহরের জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আমরা এখানে আবার ফিরতে পারবো ভাবতে পারিনি। মাছ ধরতে পারাটা তো আরও বড় ব্যাপার।’
দুই মাস আগে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধ মারাত্মক আকার ধারণ করলে দক্ষিণ লেবাননের উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসরাইলি বাহিনী। যে কারণে জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথ মাছ শিকার বন্ধ হয়ে বিপাকে পড়েন মৎস্যজীবীরা।
সপ্তাহখানেক আগে উপকূলে ইসরাইলের ড্রোন হামলায় দুই জেলে নিহত হন। আবার যুদ্ধবিরতির শর্ত উপেক্ষা করে তেলআবিবের হামলার কারণে অনেক জেলের মাঝেই আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমনকি লেবাননের সেনারাও জেলেদের নিরাপত্তা ইস্যুতে নিজ দায়িত্বে মাছ ধরতে যেতে বলেছেন। যে কারণে প্রাণ হাতের মুঠোয় নিয়ে সাগরে নামতে হচ্ছে জেলেদের।