নিজস্ব প্রতিবেদক, মণিরামপুর
যশোরের মণিরামপুরে এক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী নিয়োগ প্রাপ্তির ১১ মাস প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকেও এমপিওভুক্ত হতে চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে অবৈধ নিয়োগ বাতিলের জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়'সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছে এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে স্কুল এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তৎকালিন সভাপতি চঞ্চল ভট্টাচার্য্য এবং প্রধান শিক্ষক মশিয়ূর রহমানকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে উপজেলার বাজিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারি পদে চাকুরি নেয় হেলাল উদ্দীন। কিন্তু আজ অবধি বিদ্যালয়ে যায়নি সে। তবে এলাকায় গুঞ্জন চলছে, সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য'র চাচাতো ভাই নেহালপুর কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ চঞ্চল ভট্টাচার্য্য হেলাল উদ্দিনের নিকট থেকে ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে অতি গোপনীয়তার সাথে ৩ জানুয়ারি নিয়োগ বোর্ড করে বাজিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকুরি দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, মণিরামপুরের নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে হেলাল উদ্দীনের এ নিয়োগ নিয়ে এলাকায় রীতিমত লবিং-গ্রুপিং ক্রমই জোরাল হতে থাকে। এক পর্যায়ে সে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে স্কুলে আসতে পারেনি। ফলে ১১ মাস প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকে।
গত ৬ নভেম্বর এলাকাবাসী হেলালের অফিস সহকারি পদের নিয়োগ বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
আরও পড়ুনঃ কেশবপুর বণিক সোসাইটির কমিটি গঠন সভাপতি মতিয়ার, সম্পাদক আলমগীর
গত বৃস্পতিবার সরেজমিনে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে বাজিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান তরুন কান্তি হালদার সাফ জানিয়ে দেয়, অফিস সহকারি পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এমন কোন কাগজপত্র আমার হাতে বা অফিসে নেই। এমনকি হেলাল উদ্দিন নামে কোন ব্যক্তিকে আজ অবধি স্কুলে আমরা শিক্ষক মণ্ডলী কেউ দেখিনি।
এদিকে, নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর মাসে নভেম্বরের যে এমপিও আসছে, সেই এমপিওতে হেলাল উদ্দিন বেতনভুক্ত হতে চলেছে।
হেলাল জানায়, অফিস সহকারি পদে সে গত ১১ মাস পূর্বে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছে। রাজনৈতিক জটিলতার কারনে বিদ্যালয়ে যেতে পারেন না। তবে, এমপিওভুক্তির জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে কাগজপত্র পাঠানোর বিষয়ে সে সত্যতা স্বীকার করেছে।
অপর দিকে, হেলাল উদ্দিনের নিয়োগের সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাংবাদিকের হাতে আসলেও, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তরুন কান্তি হালদার অফিস সহকারী হেলাল উদ্দিনের নিয়োগের বিষয়টি লিখিতভাবে না বলছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও হেলাল উদ্দিনকে কখনও স্কুলে আসতে দেখেনি বলে জানায়।
এ ব্যাপারে মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকরাম হোসেন বলেন, হেলালের বেতনভূক্ত হওয়ার জন্য দুই মাস পূর্বে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সুপারিশপত্র পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তার অনুপস্থিতির বিষয়টি ইতোমধ্যে আমি শুনেছি। অতিদ্রুত তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।