কেশবপুরে বন্যায় প্লাবিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যাহত দুশ্চিন্তায় অভিভাবক

জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর)

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে স্কুলের মাঠসহ শ্রেণীকক্ষ। পানিতে নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্র। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে মানুষ। শ্রেণীকক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় অনেক স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যত্র ক্লাস নিচ্ছেন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া দারুনভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এঅবস্থায় সিলেবাস শেষ করা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। অভিভাবকরাও সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। 

জানা গেছে, গত ১৩ থেকে ১৬ ও ২৫ থেকে ২৭ সেপ্টম্বর কেশবপুরে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এঅবস্থায় নদী পলিতে ভরাট থাকায় পানি নিষ্কাশন বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পৌরসভাসহ ১১টি ইউনিয়নের ১০৪টি গ্রামের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়। অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দী জীবন যাপণ করছে। মানুষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছে। ৩৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১০টি মাদ্রাসা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। মাধ্যমিক ও প্রাথমিকের অনেক বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মানুষের বাড়িতে পাঠদান করাচ্ছে। বন্যার কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে। অনেক প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংংশ নিতে পারেনি।

পানিতে তলিয়ে গেছে কেশবপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজ, কেশবপুর মহিলা ফাজিল মাদ্রাসা, মধ্যকুল মহিলা আলিম মাদ্রাসা, বিদ্যানন্দকাটি রাসবিহারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা, চুয়াডাঙ্গা ও কালিচরণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হিজলডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, কাটাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মধ্যকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আড়–য়া মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলতাপোল প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কমপক্ষে ৬০টি বিদ্যালয়।  

বাউশলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলেয়া খাতুন বলেন, স্কুলের মাঠে পানি। অনেক শিক্ষার্থীর বাড়িতে পানি উঠে গেছে। অক্টোবরে দশম শ্রেণীর নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। সুজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা বলেন, প্রায় এক মাস ধরে তার স্কুল পানিতে তলিয়ে আছে। ভবনের দ্বিতীয় তলায় চালানো হচ্ছে পাঠদান। রাজনগর বাঁকাবর্শী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন বলেন, বন্যার পানিতে স্কুল প্লাবিত হয়েছে। পাশের মকবুল হোসেনের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। 

পিবিএইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বলেন, সম্পূর্ণ স্কুল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে বলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে অবহিত করা হয়েছে। মধ্যকুল মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কফিলউদ্দিন বলেন, মাদ্রাসার শ্রেণীকক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। 

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ উঁচু করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম জিল্লুর রশীদ বলেন, বন্যায় প্লাবিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। #

More From Author

আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা এখনো এদেশের মাটিতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চেষ্টা করছে : নাজমুল হাসান

নাসিরনগরে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের দায়ে ৩ জনকে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *