মণিরামপুর (যশোর)প্রতিনিধি :
মণিরামপুরে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে দ্বাদশ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষার হলে নকলের অভিযোগ আনা হলে ক্ষমা না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে একটি চিরকুটে সে লিখে গেছে। শিক্ষার্থী সাবিহা খাতুন উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে। সে গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে বাগডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সাবিহা সকালে ওই কলেজে ইংরেজী ২য় পত্রের পরিক্ষায় অংশ নেয়।
নিহতের ভাই রাকিব হোসেন বলেন, সকালে পরীক্ষা অংশ নিতে গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজে যায় সাবিহা। পরীক্ষা শুরুর পর সাবিহার কাছে থাকা কাগজের টুকরা দেখে ফেলেন কক্ষ পরিদর্শক। পরে প্রায় দেড় ঘন্টা তার খাতা আটকে রাখা হয়। কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে নিজ ঘরে দরজা আটকিয়ে রাখে। কিছুক্ষণ পর তার সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরে ঢুকে দেখা যায় সাবিহা ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না জড়ানো অবস্থা ঝুলছে। পাশে একটি সুই সাইড নোট দেখতে পাওয়া যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মণিরামপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। তবে কাগজে মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করে যাওয়া বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
আরও পড়ুনঃ বর্তমান সরকার প্রত্যেকটি শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করেছেন : ইয়াকুব আলী এমপি
চিরকুটে যা লিখে গেছে সাবিহা খাতুন- আমার কিছু মনে থাকে না বলে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগে অল্প একটু কাগজে তথ্য অংশ করে নিয়ে যায় পড়তে পড়তে। পরিক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় তা ফেলে দিতে মনে ছিল না। তারপর পরীক্ষার মধ্যে গোপালপুর কলেজের সমাজ বিজ্ঞান শিক্ষক তা দেখে ফেলে। আমি তার কাছে ভুল সিকার করলাম। অনেকবার বললাম খাতাটা দেন। সে আমার খাতা নিয়ে দেড় ঘন্টা বসাই রাখলো তাও সে খাতাটা দিল না। তাসলিমা মেডাম এবং ইসমাইল স্যার আমাকে তাড়িয়ে দিল। এতো করে বললাম ওটা আমার ফেলে দিতে মনে নেই তাও তারা আমাকে পরিক্ষার সুযোগ দিল না। তাই আমি অবশেষে লজ্জায় মুথ দেখাতে না পেরে দুনিয়া থেকে বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাক সবাই। আমার ভূল ত্রুটি থাকলে সবাই মাফ করে দিও। আমার কাছে ফারহানা ২৫ টাকা পাবে এবং সুবর্ণা ৫ টাকা এটা তোমরা দিয়ে দিও।
এ ব্যাপারে গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম বলেন, দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাবিহা খাতুনের আত্মহত্যার বিষয়টি দুঃখজনক। পরীক্ষা চলাকালিন শিক্ষার্থী সাবিহার কাছে নকল পাওয়া যায়। যে কারণে কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদ্বয় তার কাছ থেকে খাতা নিয়ে নেন। এ ব্যাপারে শিক্ষক ও কমিটিকে নিয়ে জরুরী সভা করা হয়েছে।