কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
কেশবপুরে "নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ" এবছর এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ৮ মার্চ (শুক্রবার) সকালে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ তানভীর হোসেন সভাপতিত্বে এবং উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সুজন কুমার চন্দ্র-এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা সাদেক চম্পা, উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বাবু তপন কুমার ঘোষ, ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি শামীম আখতার মুকুল, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস আর সাঈদ, নিউজ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ বুলবুল, জীবিকা নারী উন্নয়ন সংস্থার সম্পাদিকা মনিরা খানম। অনুষ্ঠানে নারী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপালি রানী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পলাশ কুমার মল্লিক, উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার পুলোক কুমার সিকদার, উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার মোঃ আব্দুস সামাদ, বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ডের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আকমাল আলীসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন নারী উন্নয়ন সংস্থার নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নারী উদ্যোক্তাগণ।
উল্লেখ্য, লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে এবং নারীদের সম-অধিকারের জন্য সারা বিশ্ব জুড়ে প্রতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। শিল্প সাহিত্য- সহ সব ধরনের ক্ষেত্রে সমাজের সমস্ত কাজে নারীদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতেই এই দিনটি পালিত হয়। তবে, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস।
আরও পড়ুনঃবর্তমান সরকার প্রত্যেকটি শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করেছেন : ইয়াকুব আলী এমপি
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা। সেই মিছিলে চলে সরকারের লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন। দীর্ঘদিন পর ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ, জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। তারপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। সেই সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন। ওই সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন।
১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে লাগলো। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার লাভের পূর্ব থেকেই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। অতঃপর ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানান জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে। দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে সারা বিশ্বের সকল দেশে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।