পরেশ দেবনাথ, ডুমুরিয়া, খুলনা
“আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে।” “মহাকালের জীবন নদে ঊর্মিরা যায় বয়ে, প্রীতিমাখা স্মৃতি টুকুই থাকনা অমর হয়ে।”এই কথাকে স্মরণ রেখে ফুল কলি সাহিত্য উৎসব-২০২৪-এ মিলন মেলায় ‘ফুল কলি’ পুরস্কার পেলেন দুই বাংলার ৫ গুণিজন। ফুল কলি কীর্তিমানদের উৎসাহ উদ্দীপক সামাজিক সংগঠনের পরিচালক শশাংক শেখর ঢালি-এর পরিচালনায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ১০নং ভান্ডার পাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন তালতলা জ্যোতি মঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফুলকলি পুরস্কার-২০২৪ অনুষ্ঠানটি। দুই বাংলার প্রায় তিনশত গুণিজন, সুধীজন ছুটে এসেছিলেন এখানে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) দিন ব্যাপী কবি শেখর রঞ্জন ঘোষ-এর সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের আসন গ্রহণ, ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের পর উদ্বোধনী সঙ্গীত, অসুস্থ সাহিত্যিকদের সুস্থতা এবং প্রয়াত সাহিত্যিকদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তদের উত্তরীয় পরানোসহ ক্রেস্ট, সনদপত্র, বই, ডায়েরি, কলম, ফুল উপহার দেয়া হয়।সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সহকারী অধ্যাপক শশাংক শেখর ঢালির পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সহকারী অধ্যাপক রমেশ চন্দ্র মন্ডল।
আরও পড়ুনঃ ডুমুরিয়ার ফুলকলি উৎসব-২০২৪ প্রবন্ধ গবেষণায় সম্মাননা পেলেন তাপস মজুমদার
অভ্যাগত কবিদের স্বরচিত কবিতা পাঠ-আবৃত্তি,”কবি কৃষ্ণ চন্দ্র মজুমদার ও তাঁর ‘সদ্ভাবশতক” শীর্ষক মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন, প্রাবন্ধিক তাপস মজুমদার ও সমালোচনা করেন, সহকারী অধ্যাপক বিভূতি ভূষণ মন্ডল। এরপর “লেখার মাধ্যম” শিরোনামে একটি বিশেষ আলোচনা করেন প্রফেসর ড. দিব্যদ্যুতি সরকার।
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র মন্ডল-এর সঞ্চালনায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন-তৃষা মন্ডল, অরিন্দম সেন, অরবিন্দ মৃধা, প্রফেসর ড. বিবেকানন্দ বিশ্বাস ও অ্যাডভোকেট সুব্রত চক্রবর্তী। নৃত্য পরিবেশন করে, জুঁই হালদার। তাৎক্ষণিক কবিতা রচনা প্রতিযোগিতায় আসরের সেরা কবির শিরোপা পান কবি ফারুক আলম।
ফুল কলি পুরস্কার পেলেন যাঁরা, তাঁরা হলেন, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে অরিন্দম সেন (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত), কবিতায়- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক বিপ্লব রায় (খুলনা), ছোট গল্পে-শ্বাশত নিপ্পন (মেহেরপুর), নাটকে-খায়রুল বাসার (সাতক্ষীরা), প্রবন্ধে-সহকারী অধ্যাপক তাপস মজুমদার (যশোর), শিশু সাহিত্যে অমিত কুমার কুণ্ডু (ঝিনাইদহ) ও উপন্যাসে-সহকারী অধ্যাপক মনোজ কুন্ডু (গোপালগঞ্জ)। শারীরিক অসুস্থতার জন্য দুইজন গুণিজন উপস্থিত থাকতে পারেন নাই।
লেখকদের পাঠকৃত লেখার পর্যালোচনা করেন, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর, সামাজিক-সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক সংগঠক ও গবেষক, কবি, বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভি-কথক, গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ-গবেষক এবং জীবনজাগরণদীপ্ত সঙ্গীতশিল্পী ও ধানফুল সাহিত্য গোষ্ঠীসহ অসংখ্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি ড. সন্দীপক মল্লিক।
আলোচনা করেন, প্রফেসর ড.ইবাইস আমান, প্রফেসর ড.তুষার কান্তি মন্ডল, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র যুগ্ম কমিশনার দীপক রায়, ইউপি চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ্র দে, প্রফেসর ড. বিভূতিভূষণ মণ্ডল, সহকারী অধ্যাপক কবি অজয় রায়, প্রফেসর ড. দিব্যজ্যোতি সরকার, কবি নিরঞ্জন রায়, প্রফেসর ড. সন্দীপ মল্লিক, নাট্যকার ও কথা সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ ঘোষ, ঘাসফুল সম্পাদক অনুপম ইসলাম, কবি সুরঞ্জন রায়, উজান বৈঠার সম্পাদক নিরঞ্জন রায়, কবি মাহমুদুল হাসান মামুন, কবি শিব শম্ভু মিস্ত্রি, কবি দীপক বসু, কবি প্রনব মন্ডল মানবসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য সুধিজন, গুণিজনেরা। কবি চিত্ত রঞ্জন মল্লিকের দুটি গল্পগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনের পর লাকী কূপন ড্র ছিলো একটি বিশেষ আকর্ষণ। সভাপতির মর্মস্পর্সী সমাপনী ভাষণ শেষে ছিলো সমবেত মধ্যাহ্ণ ভোজন। পুরস্কারপ্রাপ্তরা সংগঠনের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানটি দুই বাংলার একটি মিলন মেলায় পরিনত হয়েছিল।