পবিত্র শবে মেরাজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। এদিন রাতে মহান রাব্বুল আলামিনের রহমত কামনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদে-মসজিদে, নিজগৃহে ধর্মীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোরআনখানি, জিকির-আজগার এবং ইবাদত-বন্দেগীর মধ্যদিয়ে পবিত্র শবে মেরাজ উদযাপন করেন।
ফার্সি শব্দ ‘শব’ অর্থ রাত। আর আরবি ‘মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। আর তাই ‘শবে মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্ব গমনের রাত। মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, ২৬ রজব দিবাগত রাতে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.) আল্লাহ তা’য়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। এ বছর সেই রাতটি পড়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি।
এই মেরাজের মধ্য দিয়েই নামাজ মুসলমানদের জন্য ফরজ করা হয়। এ রাতেই প্রতিদিন ৫ বার নামাজ আদায় করার বিধান নিয়ে আসেন মহানবী।
মেরাজ কোরআন-হাদিস ও ইজমায়ে উম্মত-এর অকাট্য দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত। এই রাতের গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে কোনো মুসলমানের সন্দেহ নেই। এ ঘটনার পর রসুল সা. অনেক বছর সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও শবে মেরাজকেন্দ্রিক কোনো আমলের ব্যাপারে বিশেষ হুকুম দেননি। রসুল সা. নিজেও বিশেষ আমল করেননি।
রসুল সা. এর তিরোধানের পর প্রায় ১০০ বছর সাহাবায়ে কেরাম জীবিত ছিলেন। তারা ২৭ রজবকে বিশেষভাবে উদ্যাপন করেছেন বলে একটি ঘটনাও পাওয়া যায়নি। যে কাজ রসুল সা. করেননি, সে কাজ সাহাবায়ে কেরামও পরিহার করেছেন। সুতরাং ২৭ রজবে কোনো আমলকে দীনের অংশ মনে করা, সুন্নত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হাদিস ও সুন্নতসম্মত নয়। এটাকেই বেদআত বলা হবে।
শবে মেরাজ উপলক্ষ্যে অনেককে বিশেষ নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে সমবেত হতে দেখা যায়। বহু নারীও সেই রাতে নামাজ আদায় করার পদ্ধতি কী জানতে চান। বহু মুসলমান এই রাত উপলক্ষ্যে মেরাজের রোজা রাখতে চান বা রাখার বিধান জানতে চান। অনেকেই শবে মেরাজের নামাজ বা রোজাকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করেন।
সহিহ হাদিসে রসুল সা. মেরাজ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। হাদিসগুলো হলো। ১. তিরমিজি ৩১৩১, ২. প্রাগুক্ত ৩১৩২, ৩. মুসনাদে আহমাদ ২/৫২৮, ৪. মুসলিম ১৬৭, ৫. প্রাগুক্ত ১৬৮, ৬. বুখারি ৩৪৯, ৭. তিরমিজি ৩৪৬২, ৮. মুসলিম ২৭৯, ৯. আহমাদ ৫/৩৮৭, ১০. মুসলিম ১৬৫, ১১. প্রাগুক্ত, ১২. আহমাদ ৩/২২৪, ১৩. প্রাগুক্ত ৩/১৮১, ১৪. প্রাগুক্ত ২/৩৫৩, ১৫. তিরমিজি ৩১৪৭, ১৬. আহমাদ ১/২৫৭, ১৭. প্রাগুক্ত ১/৩০৯-৩১০, ১৮. মুসান্নাফ, ইবনে আবী শাইবা ৩২৩৫৭, ১৯. তিরমিুজ ৩৪৬২, ২০. মুসতাদরাক ২/৩৬১