খুলনায় পৃথক দুটি বাড়ি থেকে এশিয়ান নার্সিং কলেজের দুই ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুজাতা মন্ডল এবং রাতে সীমা খাতুন নামে ওই দুই ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা দুজনই নগরীর শেখপাড়া এলাকার পৃথক দুটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
জানা গেছে, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার আমিরপুর গ্রামের শ্যামল কান্তি মন্ডলের মেয়ে সুজাতা মন্ডল। তিনি এশিয়ান নার্সিং কলেজে বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। আর সীমা খাতুন ছিলেন ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তার বাড়ি খুলনার তেরখাদা উপজেলায়।
একই দিনে একই প্রতিষ্ঠানের দুই ছাত্রীর মৃত্যুতে সহপাঠীরা শোকে ভেঙে পড়েছেন। দুটি ঘটনার মধ্যে কোনো যোগসূত্র রয়েছে কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সুজাতা মন্ডল কলেজের পাশে শেখপাড়া প্রধান সড়কের হাসিবুর রহমানের বাড়ির চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। শুক্রবার তার ঘর থেকে মোবাইল ফোন কলের শব্দ আসছিল। কিন্তু কেউ ফোন ধরছে না দেখে পাশের ঘরের বাসিন্দা কক্ষের ছিদ্র দিয়ে ঘরের সিলিংয়ে তাকে ঝুলতে দেখে স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানান। তিনি সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশকে জানালে দুপুরে পুলিশ দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার সুজাতা কলেজে যাননি। বুধবারের পর থেকে তাকে ঘরের বাইরে দেখা যায়নি। তিনি একাই ওই ঘরে ভাড়া থাকতেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সুজাতা ছিলেন সবার বড়।
অপরদিকে শেখপাড়া হাজি ইসমাঈল ক্রস রোডের আমির মোল্লার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সীমা খাতুনসহ আরও চার ছাত্রী। বৃহস্পতিবার সবাই বাড়ি চলে যাওয়ায় সীমা একাই বাড়িতে ছিলেন। শুক্রবার রাতে প্রতিবেশীদের দেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ঘরে ফ্যান ঝুলানোর হুকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) তাজুল ইসলাম বলেন, দুইজনই সুইসাইড নোটে মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় বলে উল্লেখ করেছেন। তবে দুই ছাত্রীই যেহেতু একই প্রতিষ্ঠানের। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা আমরা তদন্ত করছি। এছাড়া একজনের প্রেমের সম্পর্কের কথাও শোনা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবার যদি কোনো মামলা করতে চায় আমরা মামলা নেব।