জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর)
যশোরের কেশবপুরে নিন্ম মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির কমিটি ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধভাবে গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সভাপতির স্বাক্ষরিত ওই পকেট কমিটি বাতিল করে অচিরেই ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন সর্বস্তরের শিক্ষকরা। এনিয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ১৯৯২ সালে কেশবপুর উপজেলা নিন্ম মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতি স্থাপিত হয়। এ উপজেলার সহস্রাধিক শিক্ষকের সঞ্চয়ের টাকায় চলে সমিতির কার্যক্রম। সমিতির ফান্ডে লাখ লাখ টাকা থাকলেও শিক্ষকদের কল্যাণে কোনো অর্থ ব্যয় না হওয়ায় এমনিতেই সদস্যরা শিক্ষক নেতাদের ওপর ছিল ক্ষেপা।
গঠিত এডহক কমিটি চলতি বছর শিক্ষকদের দাবির মুখে কমিটি গঠনের জন্য ভান্ডারখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলামকে নির্বাচন কমিশনার করা হয়। তিনি ১৩ জানুয়ারি নির্বাচনী তফশীল ঘোষণা করেন। গত ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যনির্বাহী কমিটির ৬ টি পদ ও ১১ টি ইউনিয়ন প্রতিনিধি পদে মোট ৪১ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেন। তফশীল অনুযায়ী ১৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
বেগমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন মন্ডল অভিযোগ করেন, সহসভাপতি (সাধারণ) পদপ্রার্থী সুপ্রভাত কুমার বসু ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী বাসুদেব সেনগুপ্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। অথচ তারাই মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেই এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনে বিজয়ী হলে থলের বিড়াল বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তারা গত ২৫ জানুয়ারি পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই অবৈধ পকেট কমিটি করেছে।
কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি পদ প্রার্থী আব্দুল মান্নান অভিযোগ করেন, ২৩ জানুয়ারি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে আমাকে সমিতির অফিসে ডাকা হয়। সেখানে সমন্বয়ের মাধ্যমে কমিটি গঠনের কথা বলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম রুহুল আমীন। কিন্তু তিনি কোনো সমন্বয় না করেই তার স্বাক্ষরিত ওই কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেয়া হয়। যার সভাপতি এসএম মুনজুর রহমান, সহসভাপতি (সাধারণ) সুপ্রভাত কুমার বসু, সহসভাপতি (অর্থ) মো. আহসান হাবিব, সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব সেনগুপ্ত, সহসাধারণ সম্পাদক (সাধারণ) মতিয়ার রহমান, সহসাধারণ (অর্থ) মো. রেজাউল ইসলামকে করা হয়। যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূত। এ অবৈধ কমিটি বন্ধে আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
সমিতির এডহক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক বাসুদেব সেনগুপ্ত বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কেউ মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেনি। সুফলাকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার এসএম আব্দুল মজিদ বলেন, সকলের মতামতে কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ১৭ ফেব্রুয়ারির আগে কেন কমিটি ঘোষনা করা হলো তা আমি জানি না। এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম রুহুল আমীন বলেন, গত ২৩ জানুয়ারি আমাকে সমন্বয়ক হিসেবে সমিতির অফিসে ডাকা হয়েছিল। সেখানে সকলের মতামতের ভিত্তিতে ওই কমিটি করা হয়েছে। #