মিয়ানমারে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। গোষ্ঠীটির বরাত দিয়ে এ খবর তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মিয়ানমারের সর্বপশ্চিমে চিন রাজ্যের অন্তর্গত শহরটির নাম পালেতোয়া। কালাদান নদীর তীরে বন্দর নগরটি বাংলাদেশের কক্সবাজার সীমান্ত থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে। এটি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। প্রতিবেদন মতে, গত রোববার (১৪ জানুয়ারি) রাতে গোষ্ঠীটি এক মুখপাত্র বলেছেন, তারা বন্দর শহর পালেতোয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘সীমান্তে স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের বিষয়ে আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’ তিনি জানান, তারা শিগগিরই এলাকায় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগের দায়িত্ব নেবে।
আরাকান আর্মি এর আগে জানিয়েছিল, তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৫টিতেই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এছাড়া তারা জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে ১৪২টি সেনাঘাঁটি দখল করে নিয়েছে।
জান্তা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ জোটের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যেই নতুন শহর দখলে নিলো বিদ্রোহী জোটের অন্যতম আরাকান আর্মি।
এর আগে গত সপ্তাহে চীন সীমান্তবর্তী শান রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ লুকাই শহর দখলে নেয় বিদ্রোহী জোটের আরেক সদস্য তাআং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএল)।
গত বছরের অক্টোবর থেকে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াই শুরু করে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স যোদ্ধারা। এরপর তোরা একের পর এক শহর দখল করতে থাকে। ফলে একাধিক ফ্রন্টে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে জান্তা বাহিনী।
চাপের মুখে বিদ্রোহী জোটের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসে জান্তা কর্তৃপক্ষ। এরপর চীনের মধ্যস্থতায় গত সপ্তাহে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। কিন্তু তা কার্যত ভেঙে পড়েছে। বিদ্রোহী জোটের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে জান্তা বাহিনী।
মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে সেনাবাহিনী। যার পরপরই দেশটিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হয়। জান্তার দমনপীড়নের মুখে তা সশস্ত্র রূপ নেয় এবং এরপর যতই সময় গড়িয়েছে তা আরও তীব্র হয়েছে।