জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর)
যশোরের কেশবপুরে দীর্ঘ ৩০ বছরের বুড়িভদ্রা নদী পারাপারে পাচারই খেয়াঘাট নামে পরিচিত। বর্তমানে বাঁশের চার হিসেবে পরিচিত। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের চার দিয়ে বুড়িভদ্রা নদী পার হয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। বাঁশে ঝুলে নদী পার হওয়ার দুর্ভোগের কোন শেষ নেই।
জানা গেছে, উপজেলার মঙ্গলকোট ইউনিয়নের পাচারই গ্রামে পাচারই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাচারই টি এস মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওই বিদ্যালয় দুটিতে নদীর ওপারের বসুন্তিয়া গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে। ৩০ বছর ধরে পাচারই খেয়াঘাট নামে পরিচিত নৌকায় পার হয়ে ওই স্কুলে যাতায়াত করতো। নৌকার মাঝি মারা যান প্রায় এক বছর হবে। পরে স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপারের ব্যবস্থা করেন। শিক্ষার্থীদের পারাপারে ঝুঁকি হওয়ায় বাঁশের চার তৈরি করেন।
সরেজমিনে দেখা দেখা যায়, পাচারই গ্রামের উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত পাচারই সরকারি প্রাথমিক ও টি এস মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয় দুটির ৫০/৬০ জন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বাড়ি বুড়ভদ্রা নদীর ওপারে বসুন্তিয়া গ্রামে। ওই শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়া বাঁশের চার দিয়ে নদী পার হয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বাঁশের চার দিয়ে স্কুলে যাতায়াতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহামিদা আক্তার ঐশী ও ফারহান লাবিদ জানায়, তাদেরকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের চার দিয়ে নদী পার হয়ে স্কুলে আসতে হয়। আমাদের ভয় লাগে নষ্ট হওয়া চার দিয়ে নদী পার হতে। কেউ এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেয় না। আমরাসহ এলাকাবাসী একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য জোর দাবিসহ যশোর- ৬ কেশবপুর আসনের সংসদ সদস্য জননেতা শাহীন চাকলাদারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
পাচারই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বাস শহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ পাচারই খেয়াঘাট নামে পরিচিত। আগে নৌকায় পার হয়ে স্কুলে আসতো স্কুলের ছেলে মেয়েরা। গত এক বছর আগে নৌকার মাঝি মারা যাওয়ার পর স্থানীয়দের নিয়ে বুড়িভদ্রা নদীর ওপার বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। কিন্তু কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ গন্যমাণ্য ব্যক্তিদের সহায়তায় গত ৬ মাস আগে বাঁশের চার তৈরি করা হয়। বর্তমানে সেটা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের চার দিয়ে নদী পার হয়ে স্কুলে আসতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, প্রতিদিন বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ওই ভাঙা বাঁশের চার দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করছে। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ এলাকার লোকজনদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। তিনি স্থানীয় এমপির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।