আটক করে বিএনপির নেতাদের কাছে খাবার ও ফুল পাঠানো সরকারের নাটক বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৯ জুলাই) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমানউল্লাহ আমানকে আটক করার পর, হেনস্তা করার পর পরবর্তীতে ফুল পাঠানো হচ্ছে, পুলিশের অফিসে নিয়ে মিষ্টি খাওয়ানো হচ্ছে, বিষয়টিকে আপনারা কীভাবে দেখছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এই বিষয়টাকে অনেকে, যারা সমালোচক আছেন, হিউমার করে তারা বলছেন যে, এটা নাকি ভিসানীতির একটা পরিণতি। কারণ আসলে নিজেদের রক্ষা করার জন্য, নিজেদের নিরপরাধ প্রমাণ করার জন্য এ ধরনের নাটক তারা সাজিয়েছেন।
তিনি বলেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কমিটমেন্ট টু হিজ পার্টি অ্যান্ড পলিটিক্স, এটা প্রমাণ করার প্রয়োজন রাখে না। তিনি রাজনৈতিক জীবনে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রাজনীতি করেছেন, বড় হয়েছেন। আমানউল্লাহ আমানকে প্রমাণ করতে হবে না রাজনীতির প্রতি, দলের প্রতি, তার দেশের মানুষের প্রতি তার দায়িত্ববোধের কোনো ঘাটতি আছে বা নেই। কারণ তিনি নব্বইয়ে গণঅভ্যুত্থানে অন্যতম নায়ক ছিলেন। তিনি যে জনগণের প্রিয় নেতা তার প্রমাণ পরপর চার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন মানুষ জেনে গেছে, বুঝে গেছে যে, তাদের রক্ষার জন্য এসব নাটক সাজিয়েছে। আগেও এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। সুতরাং এ জিনিসগুলো নেতাকর্মী ও জনগণ গুরুত্বই দেয় না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আন্তর্জাতিক যেসব মিডিয়া আছে, আল জাজিরাতেও দেখবেন খুব পরিষ্কার বলেছে যে, বাংলাদেশের জনগণ যখন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের জন্য আন্দোলন করছে তখন এসব দমন করবার জন্য সরকার আবার আগের চেহারায় ফিরে এসেছে, গুম করছে, অত্যাচার-নির্যাতন করছে। এসব করে তারা আন্দোলনকারীদের রুখে দিতে চায়। ইতিহাস বলে, সেটা রোখা সম্ভব নয়।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আগেও তো অনেক লোককে গ্রেপ্তার করেছে, তাদের নির্যাতন করেছে, ডিবি অফিসে নিয়ে গেছে। তারপর দেখেন আমাকে, মির্জা আব্বাসকে ডিসেম্বরে নিয়ে গেছে, আমাদের এখানে অনেক নেতা আছেন প্রায় সাড়ে ৪শ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছিল তখন তো সুস্বাদু আম তাদের খাওয়ানো হয়নি, ফুলও পাঠানো হয়নি, ফলও পাঠানো হয়নি। এখন পাঠানো হচ্ছে ভিসানীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য।
দু’একদিনের মধ্যে এক দফার নতুন কর্মসূচি জানানো হবে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।
এর আগে শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকারি দলের হামলা, গ্রেপ্তারসহ এক দফার পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটি বৈঠকে বসে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি বৈঠক হয়। বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।