নওগাঁয় র্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিন নামে এক নারীর মৃত্যু এবং ঢাকা শিশু হাসপাতাল চত্বরে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএমপির কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। একইসঙ্গে হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাকে একটি মারাত্মক অপরাধ ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলেও মন্তব্য করেছে কমিশন।
মঙ্গলবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপপরিচালক ফারহানা সাঈদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন। গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে থেকে ওই নারীকে আটক করেন র্যাব জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। আটকের প্রায় দুই ঘণ্টা পর দুপুরে সুলতানাকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে র্যাব। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। গত ২৪ মার্চ সকালে রামেক হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। স্বজনদের অভিযোগ, জেসমিনকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করায় তার মৃত্যু হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিশন মনে করে হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা একটি মারাত্মক অপরাধ ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এফ এম শামীম আহাম্মদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে, ‘র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই নারী পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান’। কমিশন মনে করে, এ ধরনের বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অনভিপ্রেত। তিনি প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না এবং কীভাবে সুলতানা জেসমিনের মাথায় আঘাত লেগেছে সেটাও তার জানার কথা নয়। কিন্তু র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদকালে তার পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়া এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ-কমিশনের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়।
তাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এর বিস্তারিত প্রতিবেদন চাওয়ার কথায় বিজ্ঞপ্তিতে জানায় কমিশন।
অপরদিকে, ঢাকা শিশু হাসপাতাল চত্বরে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায়ও উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালের মতো জায়গায় চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে তার প্রতিবেদন কমিশনে পাঠাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) বলা হয়েছে।