পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার পর দীর্ঘ ১০ বছর পালিয়ে ছিলেন ফজিলাতুন্নেছা ওরফে রিয়া (২৯)। আত্মগোপনে গিয়ে নিজের বেশভূষা পরিবর্তন করেন। এক পর্যায়ে বনে যান মডেল ও অভিনেত্রী। নাম বদলে রাখেন সুহাসিনী অধরা। অবশেষে ধরা পড়তে হয়েছে তাকে। সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) হুমায়ুন কবির হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ার থেকে রিয়া ওরফে অধরাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ৫৮ গ্রাম গাঁজা, দুটি মোবাইল ফোন ও একটি জাল এসএসসির সার্টিফিকেট জব্দ করা হয়। শুক্রবার র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরিফ মহিউদ্দিন জানান, ২০১৩ সালে মিরপুরের পূর্ব মনিপুরের কাঁঠালতলায় নিজের বাসা থেকে তৎকালীন শাহ আলী থানায় কর্মরত এএসআই হুমায়ুন কবিরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাকে শ্বাসরোধ করে ও বিষক্রিয়ার ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় আদালত আসামি ফজিলাতুন্নেছা ওরফে রিয়াকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই রিয়া আত্মগোপনে ছিলেন। দীর্ঘ ১০ বছর পলাতক থাকার পর সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, হুমায়ুন কবিরের বাসায় সাবলেট থাকতেন রিয়া ও তার স্বামী রাফা-এ-মিষ্টি (আগেই গ্রেপ্তার আসামি)। অন্যদিকে হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে তার স্ত্রীর পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল। এ দ্বন্দ্বের জেরে রিয়া ও রাফার সহযোগিতায় হুমায়ুনকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন তার স্ত্রী। হত্যাকাণ্ডের পর রিয়া পালিয়ে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে পোশাককর্মী হিসেবে চাকরি শুরু করেন। পরে ২০১৫ সালে ঢাকায় এসে নাম-পরিচয় বদলে জাল এসএসসি সার্টিফিকেট তৈরি করে একটি মাল্টিমিডিয়া কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির চাকরি শুরু করেন।
২০১৬ সাল থেকে মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে চিত্রজগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন রিয়া। এক পর্যায়ে চিত্রজগতে থাকাবস্থায় তার ব্যক্তিগত পরিচয়পত্রের নাম ফজিলাতুন্নেছা ওরফে রিয়া থেকে কৌশলে সুহাসিনী অধরা নামে পরিবর্তন করেন। পরে এ নামে চিত্রজগতে নিজেকে পরিচিত মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ওই সময় থেকে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত মেরুল বাড্ডার একটি বাসায় আত্মগোপন করে বসবাস করে আসছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান আরিফ মহিউদ্দিন।