ক্রিকেটটাকে এখনো পুরোপুরি উপভোগ করছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। অবসর নেয়ার কোনো ইচ্ছেই নেই। তবে যদি কখনো মনে হয়, তাহলে অবশ্যই থেমে যাবেন ম্যাশ। কিন্তু সেটা করতে চান একেবারে নীরবে; চান না কোনো আলোচনা।
বিপিএল ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করল সিলেট ফ্রাঞ্চাইজি। আর এ কীর্তির পেছনে যে মানুষটা লড়াই করে গেছেন আদ্যোপান্ত, তাকে যখন ম্যাচ জয়ের পর এভাবে অবসর নিয়ে প্রশ্ন শুনতে হয়, তখন বিরক্তি লুকিয়ে রাখাটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ম্যাশও তাই পারেননি। যতটা সম্ভব নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে, উত্তর দিয়েছেন সোজাসাপ্টা।
মাশরাফী বলেন, ‘আমি তো অনেক আগেই বলেছি, জাতীয় দলে খেলার আশা করি না। আমি যতক্ষণ উপভোগ করছি, শরীর যতক্ষণ সাপোর্ট দিচ্ছে, আমি খেলছি। এখনো পর্যন্ত শরীর সাপোর্ট দিচ্ছে। কাউকে বলেকয়ে কিংবা প্রেস কনফারেন্স করে ক্রিকেট থেকে সরতে হবে – এমন কোনো ইচ্ছা আমার নেই। যদি টুর্নামেন্টের মধ্যেও মনে হয় খেলব না, তো খেলব না। তাই এ রকম আলোচনা আপাতত কেয়ার করার দরকার আছে বলে মনে হয় না।’
প্লে-অফে ওঠা বাকি তিন দলের মতো বিগ বাজেটে দল গড়া সম্ভব হয়নি সিলেটের। দেশি ক্রিকেটারদের ওপরই ভরসা করতে হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটাকে। তবে পরিকল্পনা মোতাবেক খেলতে পারায় এবং ম্যাচ বাই ম্যাচ পরিকল্পনা করে খেলতে পারাতেই এ সাফল্য বলে মনে করেন মাশরাফী।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই জানি আমাদের এই টিম। আমরা টার্গেট করেছি যে, এক-দুইয়ে থাকতে পারি কি না! প্রথম চারটা ম্যাচ যখন আমরা জিতে যাই, তখন কিন্তু আমরা পুরোপুরি শেইপে চলে এসেছি। ইমাদ এবং আমির টিমের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গিয়েছিল, আর আমরা সেই সুযোগটা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পেরেছি। আর এক-দুইয়ে থেকেও আমরা কিন্তু হতবুদ্ধি হইনি। আমরা জানি আমাদের এ খেলোয়াড়রাই খেলবে। এরা চলে গেলে কমের ভেতরে যদি কাউকে আনা যায়, তা হলে আমরা চেষ্টা করব। কিন্তু এক-দুইয়ে যখন থাকতে পেরেছি তখন তো সবসময় দ্বিতীয় সুযোগ ছিলই।
মাশরাফী জানান, দলের ব্যাটিং শক্তি বাড়াতে অনেকেই বিদেশি ব্যাটার আনার পরামর্শ দিলেও, তিনি আস্থা রাখতে চেয়েছেন তৌহিদ আফ্রিদি-শান্তর মতো তরুণদের ওপর। তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলেছে আমাদের বিদেশি ব্যাটার আনতে। এটা পুরোপুরি অন্যায় হতো আমাদের লোকাল যারা খেলছে তাদের সঙ্গে। এ টুর্নামেন্টের টপ তিন স্কোরার লোকাল খেলোয়াড়। এটা সম্ভবই না।’
সাদামাটা দলও যেন মাশরাফীর পরশে অসাধারণ হয়ে ওঠে। ম্যাশ মানেই ম্যাজিক, আর বিপিএল হলে তো সবার সেরা অধিনায়ক নড়াইল এক্সপ্রেসই। তবে মাশরাফী এ সাফল্যের ক্রেডিট একা নিতে নারাজ; বলেন, ‘কোনো ম্যাজিক নাই ভাই, সবই আল্লাহর রহমত। হারিনি, এ জন্য যে হারব না, তা তো নয়। আবার হেরে যাব, তার জন্য নামবই না, তাও তো নয়। আমার মনে হয় যা হয়েছে, পেছনে তা আর স্মরণ করে লাভ নেই। পরশু আমাদের একটা ফাইনাল আছে, আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব।’