বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ কিন্তু ফুটবলের বিশ্বকাপজয়ী তারকা লিওনেল মেসির জীবনে অর্ধেক নয়, সমগ্র অনুপ্রেরণার কেন্দ্রস্থলে রয়েছেন নারী। মহাতারকার জীবনে একজন নয়, দুজন মহীয়সী রেখেছেন সাড়াজাগানোর মতো অবদান।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে জীবনের সর্বোচ্চ মাইলফলক স্পর্শ করেন আর্জেন্টাইন তারকা মেসি। নিজের জীবনে প্রথমবার ছুঁয়ে দেখেন ফুটবলের সর্বোচ্চ শিরোপা। আর দলকে এনে দেন বহুল প্রতীক্ষিত ৩৬ বছরের আরাধ্য স্বপ্ন বিশ্বকাপ। আর স্বপ্নজয়ের সময়েই মেসি স্মরণ করেন একজন নারীকে।
কে সেই নারী? মেসির স্ত্রী আন্তনেলা রোকুজ্জো? না, তিনি হলেন মেসির দাদি সিলিয়া অলিভেরা কুচিত্তিনি। ফুটবলের খুদে এই জাদুকরের প্রথম অনুপ্রেরণার নাম সিলিয়া। এই নারীই মেসিকে ‘মেসি’ হয়ে ওঠার শক্তি দিয়েছেন শৈশব থেকে।
আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছিলেন, ‘ছোটবেলায় যখন লোকজন আমাকে খেলা থেকে তুলে দিত, তখন দাদি বলতেন, ওকে খেলতে দাও। ও পুরো খেলাটাই ঘুরিয়ে দেবে।’
বাস্তবে তেমনটিই ঘটেছে। দাদির সেই বিশ্বাস মেসি রেখেছেন ফুটবলের ২২তম আসরে। আর ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালের সেই ম্যাচে গঞ্জালো মন্টিয়েলের নেয়া জয়সূচক টাইব্রেকার শটের আগে মেসি বলে ওঠেন ‘Puedu ser hoy abu…’। যার অর্থ দাঁড়ায়: ‘সেই দিনটি আজ এসে গেছে, দাদি।’ এর পরই গঞ্জালোর শটে গোল হলে চিৎকার করে ওঠেন খুদে জাদুকর এবং হাঁটু গেড়ে বসে কেঁদে ফেলেন।
মেসির পাঁচ বছর বয়স থেকে এখন পর্যন্ত পাশে রয়েছেন রোকুজ্জো। শৈশবে পরিচিত রোকুজ্জোর সঙ্গে ২০০৭ সালে প্রেম শুরু হয় মেসির। সেটি প্রকাশ পায় দুই বছর পর। ২০১০ সাল থেকে একসঙ্গে থাকা শুরু করেন মেসি-রোকুজ্জো। ২০১২ সালে জন্ম নেয় প্রথম সন্তান থিয়াগো। দ্বিতীয় সন্তান মাতেওর জন্ম হয় ২০১৫ সালে। এর দুই বছর পর বিয়ে করেন তারা। সবশেষ ২০১৮ সালে জন্ম হয় তৃতীয় সন্তান সিরোর।