তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দেশ দুটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ১৭৯ জনে। খবর সিএনএনের।
তুরস্কের জরুরি সমন্বয় কেন্দ্র (এসএকেওএম) জানিয়েছে, রোববার পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ২৯ হাজার ৬০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সিরিয়ার পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমকে এ পর্যন্ত চার হাজার ৫৭৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, তুরস্ক ও সিরিয়ার ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ায় গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে অন্তত ৫৩ লাখ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। তুরস্ক ও সিরিয়ার প্রায় ৯ লাখ মানুষের জরুরি গরম খাবারের সহায়তা প্রয়োজন।
গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়া আগে থেকেই সংকটে ছিল, এর মধ্যে নতুন সংকট ডেকে এনেছে গত সপ্তাহের ভূমিকম্প। ভয়াবহ এ দুর্যোগটির পর তুরস্কে বিভিন্ন দেশ থেকে সহায়তা পাঠানো হলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরিয়ায় সহায়তা পাঠাতে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
ভূমিকম্পে তুরস্কে অন্তত ছয় হাজার বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে ভবনগুলোর নির্মাণকাজ নিয়ম মেনে করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ধসে যাওয়া ভবনগুলোর ঠিকাদারদের শাস্তির আওতায় আনারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কে ভূমিকম্প-কবলিত এলাকাগুলোর ভবন নির্মাণে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করা এবং তাদের শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়।
ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশগুলোর কর্মকর্তাদের ‘ভূমিকম্প অপরাধ তদন্ত ইউনিট’ নামে আলাদা কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নীতিমালা না মেনে ভবনগুলো নির্মাণের কারণেই এত ধসের ঘটনা ঘটেছে। গত সপ্তাহের ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া ভবনগুলোর মধ্যে নতুন নির্মিত অনেক বাড়িও রয়েছে। বাড়িগুলো নির্মাণের সময় অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
এ ঘটনায় গত শনিবার তুরস্কের ১০ প্রদেশ থেকে শতাধিক ঠিকাদারকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এছাড়া আরও অনেক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
তুরস্কে এর আগে ১৯৯৯ সালেও ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এরপর দেশটিতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। গত সপ্তাহের ভূমিম্পের পর থেকে অভিযোগ উঠেছে, দেশটিতে অনেক ভবন নির্মাণেই ওই নীতিমালা মানা হয়নি। দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে অনেকেই নীতিমালা না মেনে ভবন নির্মাণ করেছেন।