কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শেখ হাসিনা হলে গ্যাসের পাইপ লিক হওয়ার ঘটনায় ঐ হল সহ অন্যান্য আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।শুক্রবার মধ্যরাতে (৪ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহত হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্যাসের গন্ধের তীব্রতায় শেখ হাসিনা হলসহ পাশের নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে হলের নীচে এসে জড়ো হন। গ্যাস লিকের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের অন্যান্য হল ও বাসা থেকে শিক্ষার্থীরা ছুটে আসেন।
এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা হলের হাউজ টিউটর ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আল-আমীনকে নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন হলে উপস্থিত হন। এর কিছুক্ষণ পরই গ্যাসের মূল লাইন বন্ধ করা হয়। তারপর প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী হল পরিদর্শনে আসেন। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি হল প্রভোস্ট সাহেদুর রহমানকে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গিয়েছে।
শেখ হাসিনা হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিসিলি জামান বলেন, আজকের গ্যাস লিক হয়েছে, আগুন লাগেনি। তবে আমরা গত মিটিংয়ে গ্যাস লিক হওয়ার বিষয়টি স্যারকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে ঠিক করে দিবেন বলে আশ্বাস দেয়া হয়। দুর্ঘটনা বলে কয়ে আসে না। এরকম ইমারজেন্সি বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করা উচিত হল প্রসাশনের।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মারজান আক্তার বলেন, ‘ ঘটনা বুঝে ওঠার আগেই হলের ভেতর মেয়েদের চিৎকার এবং ছুটোছুটিতে আতঙ্কে পড়ে যাই। কি হয়েছে না বুঝলেও দ্রুতই হলের বাহিরে বেরিয়ে আসি। গত ৩ দিন আগেও প্রভোস্ট স্যারকে গ্যাস লাইন সমস্যার বিষয় জানানো হলে তিনি বরাবরের মতো আশ্বাস দিয়েছেন।
গ্যাস লিক হওয়ার ঘটনায় কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার চুয়ারা বাজার ফায়ার সার্ভিস সাব স্টেশনের সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে
সাব-অফিসার মোসলেম মিয়াজী বলেন, ‘গ্যাসের লাইনে সমস্যা ছিল। এটা ওনারা সমাধান করে ফেলেছে। সকালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাইন মেরামত করা হবে।’
এই ব্যাপারে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট মো. সাহেদুর রহমান বলেন,’আমাদের হলে একটি এক্সট্রা চুলা রয়েছে যেটি দেওয়া হয়েছে মেয়েদের চা বানানো বা খাবার গরম করার মতো হালকা কাজের জন্য। কিন্তু অনেকেই সেখানে রান্না করে। তাই চুলার চাবিটি অকেজো হয়ে যায় এবং আমি তাদের সে চুলাটি ব্যবহার করতে মানা করেছি। হয়তো কেউ না জেনে বা অসাবধানতাবশত চুলাটি আবার চালু করেছে তাই এমন হয়েছে। শুক্রবার সচরাচর মিস্রী পাওয়া যায় না তাই আমি বলেছি শনিবার সকালে আমি ঠিক করিয়ে দিবো। তাদের মানা করার পরেও তারা কেন এই চুলা ব্যবহার করেছে তা আমার জানা নেই।”
ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, “আমি আজকে সকালে ঢাকা এসেছি তাই খবর শুনে সাথে সাথে যেতে পারিনি। কিন্তু আমার কলিগ যারা আশেপাশে থাকে তাদেরকে সেখানে গিয়ে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি।”
প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘গ্যাস লাইনে লিক ছিল। আমরা হলের মেইন লাইন বন্ধ করে দিয়েছি। ফায়ার সার্ভিসের লোকেরাও দেখে গেছে, আপাতত কোন সমস্যা নাই। কালকে সকালেই আমরা এই সমস্যার সমাধান করে দিব।’
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, হলে ‘মেয়েদের চিৎকার শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। গ্যাস লাইন লিক হয়েছে। আপাতত গ্যাসের লাইনটা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আগামীকাল সকালে গ্যাসের লাইন ঠিক করা হবে।’