আর্টহাউস চলচ্চিত্রের বিশ্বসেরা স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ‘মুবি ডটকম’-এ (mubi.com) রয়েছে জ্যঁ লুক-গদার, ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা, মার্টিন স্করসেসি, কোয়েন্টিন টারান্টিনো, রোমান পোলানস্কি, ডেভিড ফিঞ্চার, ফ্রাঁসোয়া ক্রুফোর মতো খ্যাতিমান নির্মাতাদের মাস্টারপিস সিনেমা। এগুলোর পাশাপাশি স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘মায়ার জঞ্জাল’। অবিশ্বাস্য সুন্দর ও আকর্ষণীয় সিনেমার তালিকায় রাখা হয়েছে এটি। একইসঙ্গে বিভিন্ন উৎসবে ছবিটির অর্জন এবং কলাকুশলীদের তালিকা উল্লেখ রয়েছে।
মুবি ডটকম-এ রয়েছে ফরাসি নির্মাতা ফ্রসোয়া ক্রুফোর ‘দ্য ফোর হান্ড্রেড ব্লোজ’ (১৯৫৯), হংকংয়ের নির্মাতা ওঙ কার-ওয়াই পরিচালিত ‘ফলেন অ্যাঞ্জেল’ (১৯৫৫), আমেরিকান নির্মাতা জোয়েল কোয়েন ও এথান কোয়েনের ‘নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন’ (২০০৭), ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার ‘গডফাদার পার্ট ওয়ান’ (১৯৭২) ও ‘গডফাদার পার্ট টু’ (১৯৭২), মার্টিন স্করসেসির ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’ (১৯৭৬), কোয়েন্টিন টারান্টিনোর ‘পাল্প ফিকশন’ (১৯৯৪) ও ‘রেজারভয়ার ডগস’ (১৯৯২), ডেভিড ফিঞ্চারের ‘ফাইট ক্লাব’ (১৯৯৯), ফ্রান্স-ব্রাজিলের যৌথ প্রযোজনায় ফের্নান্দো মেইরেলিস ও কাতিয়া লুন্দ পরিচালিত ‘সিটি অব গড’ (২০০২), ফরাসি নির্মাতা জ্যঁ-লুক গদারের ‘ব্রেথলেস’ (১৯৬০), পোল্যান্ডের নির্মাতা রোমান পোলানিস্কির ‘চায়না টাউন’ (১৯৭৪)।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি ছোটগল্প অবলম্বনে ‘মায়ার জঞ্জাল’ পরিচালনা করেছেন ভারতের ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী। ছবিটির মাধ্যমে অনেক বছর পর বড় পর্দায় দেখা যাবে অভিনেত্রী অপি করিমকে। ছবিটিতে তার চরিত্রের নাম সোমা। স্বামী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তার অসহায় সংসার। স্বামী বেকার। এ কারণে সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াতে একটি বাসায় কেয়ারটেকারের চাকরি নেয় এই নারী।
২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় ‘ব্যাচেলর’ ছিল অপি করিমের প্রথম চলচ্চিত্র। এরপর আর বড় পর্দায় পাওয়া যায়নি তাকে। ‘মায়ার জঞ্জাল’-এর মাধ্যমে আবারও বড় পর্দায় ফিরছেন তিনি।
সোমার স্বামীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। এছাড়াও আছেন ঢাকার সোহেল মণ্ডল, কলকাতার পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, চান্দ্রেয়ী ঘোষ, শাওলি চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
ছবিটির প্রযোজক জসীম আহমেদ জানিয়েছেন, ‘মায়ার জঞ্জাল’-এর মুক্তি উপলক্ষে কলকাতার শিল্পীদের ঢাকায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি পরিচালনা করে দেশ-বিদেশে খ্যাতি পেয়েছেন। এগুলো হলো ‘দাগ’, ‘অ্যা পেয়ার অব স্যান্ডেল’ ও ‘চকোলেট’।
চীনের মর্যাদাসম্পন্ন সাংহাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এশিয়ান নিউ ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ডের অফিসিয়াল সিলেকশনে ‘মায়ার জঞ্জাল’ ছবিটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়। এর ইউরোপিয়ান প্রিমিয়ার হয় মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ফিল্মস অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড বিভাগে। এরপর ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় জোগজা-নেটপ্যাক এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের এশিয়ান পার্সপেক্টিভস বিভাগে আমন্ত্রণ পায় ছবিটি। এছাড়া ইতালির রোমে এশিয়াটিকা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের প্রতিযোগিতা বিভাগ ‘এনকাউন্টার উইথ এশিয়ান সিনেমা’য় বেস্ট ফিচার ফিল্ম জুরি অ্যাওয়ার্ড, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে রেইনবো চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্র এবং ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এশিয়ান কমপিটিশনে প্রতিযোগিতা করে চিত্রনাট্যের জন্য পুরস্কার পেয়েছে ‘মায়ার জঞ্জাল’।
‘মায়ার জঞ্জাল’ যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে ভিউস অ্যান্ড ভিশনস এবং কলকাতার প্রতিষ্ঠান ফ্লিপবুক।
২০১৩ সালে ‘ফড়িং’ ছবির মাধ্যমে পরিচালনায় আসেন ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী। এরপর টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য ‘একটি বাঙালি ভূতের গপ্পো’ ও ‘ভালোবাসার শহর’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি পরিচালনা করেন তিনি। অনেক বছর পর পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনায় ফিরলেন কলকাতার এই প্রশংসিত নির্মাতা।