ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ফুটবল খেলতে গিয়ে এক বাংলাদেশি ফুটবলার মারা গেছেন। তার নাম হানিফ রশিদ ডাব্লিউ (৫৬)।
তিনি ঢাকার আরামবাগের বাসিন্দা। খেলা চলাকালীন মাঠে হঠাৎ লুঠিয়ে পড়েন হানিফ। মাঠেই তার প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু তাতে হানিফ সাড়া না দিলে ফুটবলারকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাটের গয়েরকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ‘গ্রিনল্যান্ড ডুয়ার্স ভেটেরান্স ক্লাব’-এর উদ্যোগে প্রবীণদের নিয়ে এক ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। খেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের সাবেক ফুটবলাররা। চার দেশের মোট ১২টি ফুটবল দল খেলায় অংশ নেয়।
রোববার ছিল ম্যাচের সূচনা। প্রথম খেলায় মুখোমুখি হয় বাংলাদেশের আরামবাগ এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদহের ফুটবল দল। দুই দলের খেলা চলাকালীন মাঠেই মৃত্যু হয় হানিফ রশিদের। তবে ঠিক কী কারণে ফুটবলারের মৃত্যু হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
দলের ক্যাপ্টেন আরমান বলেন, আমরা পশ্চিমবঙ্গে খেলতে এসেছি। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ ছিল আজকে। খেলা শুরু হওয়ার ১০ মিনিটে মধ্যে মাঠে লুঠিয়ে পড়েন হানিফ। তিনি মারা গেছেন। বাংলাদেশে জনপ্রিয় ফুটবলার। এমন ঘটনায় সত্যিই আমরা ভেঙে পড়েছি।
এ বিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, বানারহাটের একটি ক্লাবের উদ্যোগে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। খেলা শুরুর পরই মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই খেলোয়াড়। বীরপাড়া হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার কারণ খুঁজছে পুলিশ।
আয়োজক কমিটির তরফে বলা হয়, দুদিনে টুর্নামেন্ট ছিল। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তার মরদেহ পাঠানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। শিলিগুড়ির এফআরও অফিসে যোগাযোগ করা হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে ময়নাতদন্তর রিপোর্ট পাওয়ার পর বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বাকি কাজ করা হবে। এরকম ঘটনায় আমরা বাকরুদ্ধ।
কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের তরফে বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জন্য আমরাও অপেক্ষা করছি। সব ঠিক থাকলে আগমীকাল মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানো হবে।
তবে আন্তর্জাতিক মানের এত বড় টুর্নামেন্টের আয়োজনে মাঠে কেন অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হয়নি? কেন মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসার মতো মেডিকেল টিম বা ডাক্তার রাখা হয়নি? আয়োজকরা কেনো নিজেরাই প্রাথমিক চিকিৎসা করবে? এ নিয়ে আয়োজকদের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন স্থানীয়রা। যদিও আয়োজকরা বলছেন, দ্রুততার সঙ্গে অসুস্থ খেলোয়াড়কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু হাসপাতালের পথে রেলগেটে আটকে পড়ে গাড়ি। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক অনুমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার। এ ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা ডুয়ার্স জুড়ে।